লগ ইন
 

Logo

Logo

ল্যাম্ব LAMB সম্পর্কে

Profile

“ল্যাম্ব ইন্টিগ্রেটেড রুরাল হেল্‌থ এন্ড ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট” ওয়ার্ল্ড মিশন প্রেয়ার লীগ (ল্যাম্ব হাসপাতাল) এর একটি চলমান প্রকল্প যা এনজিও বিষয়ক  ব্যুরো কর্তৃক ১৯৯১ সনে অনুমোদিত।

স্মারকঃ এবিব্যু/প্রকল্প-২/ওমিপ্রেলী/১৯২/৯০-৪৪২,

তারিখঃ ১১-৪-১৯৯১, এবিব্যু অনুমোদিত প্রকল্প নং- ৩৯৩/১৯৯০-৯১

ল্যাম্ব ১৯৭৬ সনে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর ও চিরিরবন্দর উপজেলায় স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

বর্তমানে এই ২০১৩ সনে, গ্রাম পর্যায়ের জন স্বাস্থ্য ও উন্ন্যন কর্মসূচী ক্লিনিক এবং অন্যান্য কার্যক্রমের সাথে অনেক বিস্তৃত এবং পাশাপাশি অন্যান্য বড় কার্যক্রমও রয়েছে। এখানে ১৫০ শয্যার একটি জেনারেল হাস্পাতাল আছে যা অত্র এলাকাসহ আশে পাশের উপজেলার প্রায় সাড়ে দশ লক্ষের ও বেশী জনগোষ্ঠিকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এখানে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে যা ল্যাম্বের কর্মী ছাড়াও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য সেবায় দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। স্বাস্থ্য এবং পুষ্টির উপর ক্রমবর্ধমাণ কার্যক্রম চলছে, এবং একটি স্কুল রয়েচ্ছ (মূলতঃ এটি ল্যাম্ব স্টাফদের ছেলেমেয়েদের সহযোগীতার জন্য)।

 

ল্যাম্ব এর বিশেষ বৈশিষ্ট হল এর কর্মসূচী এবং কার্যক্রমের মধ্যে সুন্দর সমন্বয়। জনস্বাস্থ্য কর্মসূচী, হাসপাতাল, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং গবেষণা কার্যক্রম একে অপরকে সহযোগীতা করে এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্য, গর্ভবতী মায়ের সেবা, প্রসবোত্তর সেবা, আন্ডার ফাইভ কর্মসূচী, গ্রাম স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণ, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, পুষ্টি, স্যানিটেশন, প্রতিবন্ধী শিশু এবং প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

বাংলাদেশে খুব অল্প সংখ্যক এনজিও মার্তৃ স্বাস্থ্য সেবা বিশেষ করে প্রাথমিক থেকে হাসপাতাল পর্যায় পর্যন্ত দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের উত্ত্রর পশ্চিম এই দরিদ্র অঞ্চলে ল্যাম্ব একমাত্র এনজিও যে মহিলা ও শিশুদের দিয়ে থাকে।

ল্যাম্ব এর জনস্বাস্থ্য এবং উন্নয়ন কর্মসূচী এখন দিনাজপুর জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট জেলায় এর কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে, ২৮টি স্থায়ী ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে যার ১৮টিতে নিরাপদ প্রসব কেন্দ্র দিবারাত্রী খোলা থাকে। ২০১০ সনে প্রায় ৬০,০০০ রোগী এই ক্লিনিক গুলিতে আসে যার অর্ধেকই আসেন গর্ভকালীন সেবার জন্য। এছাড়াও স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, দলীয়ভাবে কাজ করে জনগোষ্ঠির দক্ষতাবৃদ্ধি এবং দুর্যোগকালীন ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম বিদ্যমান।

ল্যাম্ব এর যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রন কর্মসূচী সরকারের কর্মসূচীর সাথে ১৯৯৪ সালে শুরু হয় এবং এটি এখন এনটিপি এর একটি অংশ। এই কর্মসূচী আশেপাশের ৪টি উপজেলায়, পার্বতীপুর, চিরিরবন্দর, খানসামা ও সৈয়দপুরে চলমান। ২০১০ সালে প্রায় ৭০০ রোগী সুস্থ্য হয়।

ল্যাম্ব হাসপাতালে প্রতি বছর প্রায় ৬০,০০০ বর্হিবিভাগের রোগী এর প্রায় ৯০০০ আন্ত:বিভাগের রোগী আসে। ল্যাম্ব হাসপাতাল স্থানীয় ভাবে কমখরচে মান সম্পন্ন স্বাস্থ্য সেবা, কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মীদের  এবং ডাক্তারদের জন্য “মার্তৃত্ব” বিষয়ক ব্যবহারিক প্রশিক্ষনের জয়গা হিসেবে উপযুক্ত কেন্দ্র। হাসপাতালের বিশেজ্ঞ সেবার মধ্যে রয়েছে অব্সট্রেট্রিকস এবং গাইনোকোলজী, প্টেডিয়েট্রিকস, সার্জারী এবং মেডিসিন অন্যান্য সেবাসমূহের মধ্যে এক্স-রে, আলট্রাসাউন্ড, ল্যাবরেটরী এবং ফার্মাসী রয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশু সেবা ইউনিট ২০১০ সনে ঠোট/তালু কাটা অপারেশন, বাঁকা পায়ের চিকিৎসাসহ প্রায় ১০০০ রোগীর চিকিৎসা প্রদান করে।

ল্যাম্ব যে সেবা প্রদান করে তার জন্য নির্ধারিত ফি নেয় তবে যারা খুবই দরিদ্র এবং ফি দেওয়ার সামর্থ নেই তাদের জন্য ভর্ত্তুকীর ব্যবস্থা আছে। প্রশিক্ষন কেন্দ্র স্বাস্থ্য বিষয়ের উপর এনজিও কর্মী, সরকারী কর্মচারী এবং ল্যাম্ব স্টাফদের প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে। মার্তৃত্ব বিষয়ের উপর সবচেয়ে বেশী জোর দেওয়া হয়ে থাকে। প্রশিক্ষণ গুলির মধ্যে সরকার অনুমোদিত এসবিএ ট্রেনিং, এডভ্যান্স মিডওয়াইফ ট্রেনিং এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য স্বল্প মেয়াদের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ট্রেনিং। বেশীরভাগ প্রশিক্ষনার্থীরই ল্যাম্ব কর্মএলাকা থেকে। ২০১০ সনে ৮০০ এর অধিক কর্মীকে প্রশিক্ষন দিয়েছে।

ল্যাম্বের গবেষণা কার্যক্রম মা/শিশু পুষ্টি এবং গর্ভধারণ ও প্রসব বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়সহ স্বাস্থ্য বিষয়ের উপরে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। যেহেতু ল্যাম্ব এর স্বাস্থ্য কার্যক্রম কমিউনিটিতে এবং হাসপাতালে বিদ্যমান এবং এর অবস্থান প্রত্যন্ত ও দরিদ্র অঞ্চলে হওয়ায় অনেক নামকরা আর্ন্তজাতিক ইনষ্টিটিউট এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্রমবর্ধমানহারে  ল্যাম্বকে দরিদ্র গ্রাম স্বাস্থ্য বিষয়ের উপর গবেষণা কাজে সম্পৃক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করছে।

ল্যাম্ব একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল চালিয়ে যাচ্ছে যার মাধ্যমে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। স্কুলটি মূলত স্টাফদের ছেলেমেয়েদের জন্য তবে স্থানীয় জনসাধারনের জন্যও খোলা আছে। স্কুলটি থাকার কারণে প্রতিষ্ঠানের দরকারী স্টাফদের ল্যাম্বে ধরে রাখতে সাহায্য করেছে যা কিনা পক্ষান্তরে অত্র এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে মানসম্পন্ন সেবাদান অব্যাহত রাখতে সহায়তা করেছে।