লগ ইন
 

Logo

ব্র্যাক এর প্রকল্প সমূহ

ব্র্যাক লার্নিং ডিভিশন

ব্র্যাক লার্নিং ডিভিশন বিস্তৃত পরিসরে মানবিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণের
মাধ্যমে ব্র্যাককর্মী এবং কর্মসুচির সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বৃদ্ধিকল্পে কাজ
করে চলেছে । এই বিভাগ দেশেবিদেশে কর্মরত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মধারায়
অবদান রাখছে এবং দেশব্যাপী ২৮টি আবাসিক লার্নিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ ও শিখন কর্মসুচি
বাস্তবায়ন করছে । দেশের বিভিন্ন স্থানে আধুনিক সুযোগসুবিধাসম্পন্ন এই সেন্টারগু্লো
প্রতিদিন আনুমানিক ৫০০০ প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ দিতে পারে ।

সংগঠনের অভ্যন্তরে পরিবর্তমান চাহিদা ও প্রয়োজন পুরণেও বিএলডি সর্বদাই
তৎপর রয়েছে । একইসঙ্গে পারিপাশ্বিক জগতে সর্বসাম্প্রতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাধারা সম্পর্কে
এই বিভাগ তার পর্যবেক্ষণ বজায় রাখে । এ ছাড়াও বিএলডি ক্রমবর্ধমানভাবে নতুনতরকর্মধারায়
যুক্ত হচ্ছে । এর মধ্যে রয়েছে ডিজিটাইজেশন, ই-লার্নিং, কেইস-ব্যাংক এবং অডিও ভিজ্যুয়াল
প্রশিক্ষণপদ্ধতি । এই বিভাগ বিশ্বব্যাপী বিভিন্নদেশে কর্মরত ব্র্যাককর্মীদের চাহিদাভিত্তিক
ও পেশাদারি মানবসম্পদ প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিরামহীরভবে কাজ
করে চলছে ।

আইসিটি বিভাগ

ব্র্যাকের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমউনিকেশনস টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগ সংগঠনের
আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কার্যপদ্ধতিকে স্বয়ংক্রিয় করতে নানাবিধ প্রযুক্তির উদ্ভাবন ঘটায়
। স্থানীয় ও বৈশ্বিক অঙ্গনে ব্র্যাকের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক কর্মকান্ডে উদ্ভাবনী ও
সৃজনশীল পন্থায় সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে এই বিভাগ সমস্যা সমাধানের উৎকর্ষের কেন্দ্র
হিসেবে ক্রমশ নিজেকে তুলে ধরছে  । এই বিভাগে
চারটি ইউনিট রয়েছে । এগুলো হচ্ছে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, নেটওয়ার্ক অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার,
হার্ডওয়্যার সার্পোট ও মিড-রেঞ্জ কভারেজ (এমআরসি) ডেস্ক ।

পার্টনারশিপ স্ট্রেংদেনিং ইউনিট (পিএসইউ) এবং প্রশাসন

ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মসুচি এবং ব্র্যাকের বাইরে সরকারি সংস্থাসমূহ, বেসরকারি
উন্নয়ন সংগঠন , মিডিয়া (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক), জনপ্রতিনিধিসহ সকলের সঙ্গে সম্পর্ক
সুদূঢ়করণ এবং সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে ২০১১ সালে পার্টনারশিপ স্ট্রেংদেনিং ইউনিট তথা
পিএসইউ-এর আত্বপ্রকাশ ঘটে । দেশের ৬৪টি জেলায় পিএসইউ –র আওতায় ব্র্যাক জেলা প্রতিনিধি
তথা ডিস্ট্রিক্ট ব্র্যাক রিপ্রেজেন্টেটিভ পদ সৃষ্টি হয়েছে ।ব্র্যাক কর্মীদের মধ্য থেকে
শিক্ষাগত যোগ্যতা,অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে বাছাই করে ডিবিআরদের ১০ সপ্তাহব্যাপী
বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করে বিভিন্ন জেলায় নিয়োগদান করা হয়েছে । পিএসইউ বার্ষিক জেলা
উন্নয়ন প্রতিবেদন তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে । এছাড়া তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর আওতায়
তথ্য পিএসইউ এবং ডিবিআর ব্র্যাকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন ।

প্রশাসন বিভাগ বৈদেশিক অনুদানপুষ্ট প্রকল্পসমূহ প্রস্তুতকরণে সহায়তা প্রদান,
সঠিক সমযে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে তা জমাদান এবং তার অনুমোদন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দাযিত্বপালন
করে আসছে । এছাড়া আড়ং ও ব্র্যাকের অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠনের পণ্য নিবন্ধন ও নবায়ন,
ব্র্যাকে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের কাজ প্রশাসন
বিভাগের মাধ্যমে হয়ে থাকে ।

মানবসম্পদ বিভাগ

গুনগত এবং কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে ব্র্যাক মানবসম্পদ বিভাগ অত্যাধুনিক
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং কর্মপদ্ধতির প্রচলন করেছে । নিয়মতান্ত্রিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা,
সমতাবিধান, বৈচিত্রাময়তার প্রতি শ্যদ্ধা ও যোগ্যতার স্বীকৃতি হল ব্র্যাক মানবসম্পদ
বিভাগের প্রধান লক্ষ্য । এই বিভাগের মানবসম্পদ নীতিমালা ও কার্যপ্রণালিবিধির লক্ষ্য
হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন সেবা ও কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের
লক্ষ্য অর্জন এবং কর্মীদের প্রত্যাশা পূরণে সহায়তা করা ।

জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি

জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি বিভাগ ব্র্যাকে সর্বত্র নারীদের সমানাধিকার
ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে । এই বিভাগ সমানাধিকারের মূল্যবোধগুলো সংগঠনের
বিভিন্ন কর্মসুচির মধ্যে অর্ন্তভূক্ত করার মাধ্যমে সমাজের জেন্ডারবৈষম্য দূর করার জন্য
কাজ করে । এই বিভাগ নারীপুরুষের জেন্ডারভূমিকা সম্পর্কে সংগঠন ও সমাজে সচেতনতা গড়ে
তোলে এবং জনগোঠীর মধ্যে একটি জেন্ডারবান্ধব প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে সহায়তা করে, যাতে
নারীপুরুষ ও শিশুদের জন্যবৈষম্য এবং সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায় ।এ ছাড়াও
এই বিভাগ জেন্ডারসাম্য প্রবর্ধন এবং জাতীয় পর্যায়ে সরকারের বিভিন্ন নীতিমালা এবং আলোচ্যসুচিকে
প্রভাবিত করে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কাজ করে । এই বিভাগ জেন্ডারসাম্য নিশ্চিত করার
জন্য আলোচনাসভার আয়োজন, কর্মসুচি পালন এবং জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক মৈত্রীজোট তৈরির জন্য
কাজ করে ।

অর্থ ও হিসাব

ব্র্যাকের অর্থ ও হিসাব বিভাগ সংস্থার অভ্যন্তরে কার্যকারিতা বৃদ্ধির
লক্ষ্যে এবং ব্যবস্থাপনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সামর্থ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে ।এই বিভাগ উন্নয়ন কর্মসুচির জন্য বাজেট প্রণয়ন, ব্যয় ব্যবস্থাপনা,
অর্থ বনিযোগ, অর্থের প্রবাহ এবং লাভ ও খরচ বিশ্লেষণ, কার্যকর ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়ন
প্রকল্পসমূহ, এন্টারপ্রাইজেস, ইনভেস্টমেন্ট, দাতাদের অনুদান, সম্পত্তিসমূহ, কর্মীদের
আনুতোষিক, বেতন এবং কর ও কর্মীদের জন্য ঋণসর্ম্পকিত প্রতিবেদন প্রস্তুতি করে এবং আর্থিক
উপাত্তের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ।

ব্র্যাকের স্বচ্ছতা এবং তথ্য প্রকাশেরমান বজায়রাখার মধ্য দিয়ে অর্থ এবং
হিসাব বিভাগ সহযোগী ও অংশীদারদের কাছ থেকে আস্থা ও সুনাম অর্জন করেছে । হিসাব ও অর্থ
বিভাগের বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন আর্ন্তজাতিক মানসম্পন্ন করে তৈরি করা হয় । এর
স্বীকৃতি হিসেবে ২০১১ সালে ব্র্যাক ইনস্টিটউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ
(আইসিএবি) এবং সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অব অ্যাকাউনট্যান্টস (সাফা)- এর কাছ থেকে পুরস্কার
লাভ করেছে ।

নির্মান ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ

নির্মান বিভাগ ব্র্যাক এবং তার নিয়ন্ত্রণাধীন সংগঠণসমূহের জন্য পাঁচশরও
অধিক স্থাপনা নির্মান করেছে । দেশব্যাপী এসব স্থাপনার মধ্যে রয়েছে ব্র্যাকের এলাকা
ও শাখা কার্যালয়, প্রশিক্ষন কেন্দ্র, আড়ং বিপনি কেন্দ্র, আয়েশা আবেদ ফাউন্ডেশন, পোলট্রি
ও ফিশ হ্যাচারিজ, সেরিকালচার এবং কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র, নার্সারি, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়
কেন্দ্র, ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোজেক্টের কারখানা ও ভবন, ব্র্যাক কর্মীদের জন্য আবাসন
ও বিনোদন কেন্দ্র । এই ভবনসমূহের যথাযথ ব্যবহার ও রক্ষনাবেক্ষণ নিশ্চিত করার জন্য ব্র্যাকের  রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ ১৯৯৬ সাল থেতে নির্মান বিভাগের
সঙ্গে কাজ করছে । আরও সুদক্ষ পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জ্য  ২০০৬ সালে এই দুটি বিভাগের একত্রীকরণ করা হয় ।

কমিউনিকেশনস

কমিউনিকেশনস বিভাগ ব্র্যাকের ভাবমূর্তি উপস্থাপন, সংরক্ষণ এবং প্রবর্ধনের
ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে । অভ্যন্তরীণ এবং বর্হিজগতের মধ্যে তথ্য ও ধ্যানধারনা
ফলপ্রসু বিনিময়ের মাধ্যমে নবধারা প্রবর্তন ও সম্মিলিত শক্তির বিকাশে এই বিভাগ সহায়তা
দান । বহিঃযোগাযোগের ক্ষেত্রে পূর্বাপর সঙ্গতি বজায় রাখা, অভ্যন্তরীণভাবে জ্ঞান ও শিক্ষার
বিনিময়ে সহায়তা দান, কর্মীদের সম্পৃক্তকরণ এবং যথাযথ ব্র্যান্ড ব্যবহার নিশ্চিতকরণ
কমউনিকেশনসের দায়িত্ব ।এই বিভাগ ব্র্যাকের অভ্যন্তরে ক্রমন্বয়ে যোগাযোগ ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে,
নতুন নতুন কার্যক্রমের মাধ্যমে বর্হিবিশ্বে আরও ভালভাবে ব্র্যাকের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে
এবং একটি সাধারণ প্লাটফর্ম তৈরি করে দেশ ও দেশের বাইরে ব্র্যাকের রুপকল্প, লক্ষ্য ও
মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ ।

অ্যাডভোকেসি

ব্র্যাক অ্যাডভোকেসি ব্যক্তি, সমাজ, সংগঠন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী
এবং নীতিনির্ধারক পর্য়ায়ে আচরণগত পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে সামাজিক মানবাধিকার পরিস্থিতির
উন্নয়ন সাধনে নিরলসভাবে কাজ করে চলছে । এই ইউনিট ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মসুচি এবং অঙ্গসংগঠনমূলক
সামাজিক যোগাযোগ ও মিডিয়া মবিলাইজেশন কার্যক্রম পরিচালনা করে । এ ছাড়াও অ্যাডভোকেসি
ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে দক্ষতা ও কৌশলগত উন্নয়নের জন্য কাজ করে থাকে ।

ব্র্যাক আর্জাতিক

দারিদ্র বিমোচন ও দারিদ্রের ক্ষমতায়নকল্পে ব্র্যাক তার এযাবৎকালের উদ্ভাবণী
অভিষ্গতা এবং বহুমুখি কর্মসূচি বিস্তারের সার্থ্যকে কাজে লাগিয়ে দেশের বাইরেও দারিদ্র
ও মানবিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। অনুঘটক, সংঘটক এবং সক্রিয় অংশীদার হিসাবে
দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই পরিচালনা করার উদ্দীপনাই ব্র্যাক বহিবিশ্ব কার্ক্রমের মূল
চালিকাশক্তি ।

২০০২ সালে আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের অবসানের পর যখন ৩০ লক্ষ শরণার্থীদ্রতাদের বাসভূমিতে ফিরতে থাকে,
তখন ব্র্যাক তাদের সাহায্যে এগিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেয় । চল্লিশ বছর আগে বাংলাদেশে
ঠিক একই ধরণের পরিস্থিতিমোকাবেলার উদ্দেশ্যে ব্র্যাকের কার্
ক্রমের সূচনা ঘটেছিল । ব্র্যাক আফগানিস্তানে
একটি কর্দল পাঠায় । বাংলাদেশের বাইরে এটাই ছিল ব্র্যাকের প্রথম কার্ক্রম । বর্মানে
ব্যাকে আফগানিস্তানে কর্মরত সবচেযে বড় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা । স্বাস্থসেবা, মাইক্রোফইন্যান্স,
গ্রামীন মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং কিশোরকিশোরীদের ক্ষমতায়ন কর্মসূচি পরিচালনার মাধ্যমে
ব্র্যাক আফগানিস্তানের ৪.৭২ মিলিয়ন মানুষকে তার সেবার আওতায়নিয়ে এসছে ।

বন্যাকবলিত বাংলাদেশের কর্- অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সুনামি-আক্রান্ত শ্রীলংকার
পুর্গঠনে ২০০৫ সালে ব্র্যাক সেখানকার সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে ত্রাণ ও পুর্বাসন
কার্ক্রম শুরু করে । অতঃপর ত্রাণ কার্ক্রমকে স্থিতিশীল উন্নয়নে রুপান্তরিত করার লক্ষ্যে
অর্নৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচি শুরু করে। এই কর্সুচির মাধ্যমে ০.৫৬ মিলিয়ন লোকেরকাছে সেবা
পৌছে দেওয়া হচ্ছে ।

২০০৬ সালে উদ্যোক্তা এবং তানজানিয়ায় কার্ক্রম শুরুর পর থেকে যথাক্রমে
২.৮ মিলিয়ন ও ১.৩ মিলিয়ন মানুষকে ব্র্যাক তার মাইক্রেফাইন্যান্স, ক্ষদ্র উদ্যোগ উন্নয়ন,
কৃষি, হাঁসমুরগি ও গবাদি পশুপালন, কিশোরকিশোরীদের ক্ষমতায়ন এবং জীবিকাসংস্থান কর্সূচিসমূহের
মাধ্যমে সেবা প্রদান করে দুটিদেশেই সর্বৃহৎ উন্নয়ন সংস্থায় পরিণত হয়েছে ।উগান্ডায় ব্র্যাকের
সবচেয়ে বড় চাকরিদাতা সংস্থা,সেখানে ৩০০০ স্থানীয় ব্র্যাককর্মী কাজ করছে, যাদের ৮৭ শতাংশই
নারী ।

২০০৭ সালে ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচির মাধ্যমে পাকিস্তানে তার
কার্ক্রম শুরু করে । পরে সেখানে নানা উন্নয়নমূলক কর্সূচি যেমন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা,
কৃষি এবং অতিবদরিদ্র জনগষ্ঠিীর সহায়তায় সমন্বিত কার্ক্রম পরিচালনা করে সেদেশের ১০ লক্ষাধিক
মানুষের নিকট অত্যাবশ্যক সেবা পৌছে দিচ্ছে ।

২০০৭ সালে দক্ষিণ সুবাদে ব্র্যাকের কর্কান্ডের সূচনা হয় । সদ্যস্বাদীন
দক্ষিণ সুবাদে কর্রত অন্যতম বহত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে ব্র্যাক বর্মানে মাইত্রেুাফাইন্যান্স,
স্বাস্থ্য,শিক্ষা,কৃষি,এবং কিশোরকিশোরীদের ক্ষমতায়ন কর্সূচি পরিচালনার মাথ্যমে ০.৯১৫মিলিয়ন
লোকের কাছে সেবা পৌছে দিচ্ছে। একটি বিশেষ সরকারি এবং জাতি সংঘ শান্তি তহবিলের মাধ্যমে  সেদেশের ১০ টি প্রদেশের ৬৯টি জনগোষ্ঠী ভিত্তিক সংস্থাকে
প্রযুক্তিগত এবং অনুদান সহায়তা প্রদানের মধ্যদিয়ে ব্র্য্যাক দক্ষিণ সুদানে তার কার্যক্রমের
বিস্তার ঘটাচ্ছে ।

ব্র্যাক ২০০৮ সালে সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়ায় তার কার্যক্রম শুরু করে ১১
বছরে গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত সিয়েরা লিওনে ব্র্যাক তার বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ পরবর্তীকালের
কর্মসুচি পরিচালনার অভিঞ্গতাকে কাজে লাগিয়েছে । ব্র্যাক তার মাইক্রোফাইন্যান্স্, কৃষি,
হাঁসমুরগি ও গবাদি পশুপালন স্বাস্থ্য এবং একইসঙ্গে আইন কর্মসুচির মাধ্যমে ০.৭৮ মিলিয়ন
লোককে দেশ পুর্নগঠনেসহায়তা করছে। রাইবেরিয়ায় সেদেশের বর্তমান রাষ্টপতি এবং নোবেল সান্তি
পুরস্কার বিজয়ী অল্যান জনসন স্যারলিফের আহবানে সাড়া  দিয়ে ব্র্যাক তার কার্যক্রম শুরু করেছে । ব্র্যাক
বর্তমানে মাইক্রোফাইন্যান্স, ক্ষদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন, কৃষি ও গবাদি পশুপালন এবং স্বাস্থ্য
কর্মসুচির মাধ্যমে ৫ লক্ষাধিক লাইবেরীয় জনগণের জন্য একটি ভবিষ্যৎ গঠনের লক্ষ্যে কাজ
করে যাচ্ছে ।

বিগত কয়েক বছর যাবৎ ব্র্যাকের সহায়তায় হাইতিতে ফনকোজ নামের একটি স্থানীয়
মাইক্রোফাইন্যান্স সংস্থা  অতিদরিদ্র কর্মসুচির
অনুরুপ কার্যক্রম পরিচলিনা করছিল । ২০০৯ সালে হাইতিবাসীর পক্ষ থেকে ব্র্যাককে সেদেশে
কার্যক্রম শুরু করার আহবান জানানো হয় । এর চার মাস পর ২০১০ সালের  জানুয়ারি মাসে ভুমিকম্পবিধ্বস্ত হাইতিতে ব্র্যাক
তার শুরুর ঘোষনা করে । ভুমিকম্পের পরপরই ব্র্যাক আহতদের সাহা্য্য করতে লিম্ব অ্যান্ড
ব্রেস সেন্টার স্থাপনের জন্য্ অভীজ্ঞ ব্র্যাককর্মীদলকে হাইতিতে পাঠায় । বর্তমানে ব্র্যাক
বিপন্ন ও সুবিধাবঞ্চিত নারী ও শিমুদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাদের জীবনমানের উন্নতি এবং
কৃষি, গৃহর্মিান ও এন্টারপ্রাইজ উন্নয়ন কর্মসুচির মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের অর্ধনৈতিক
উন্নয়নে কাজ করছে ।

ফিলিপাইনের মুসলিম-অধ্যুষিত স্বাযত্বশাসিত অঞ্চল মিন্দানাওয়ে, যেখানে
স্কুলে অধ্যয়নরত এবং স্কুল থেকে ঝরে-পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা সমান, সেখানে ২০১২ সালে
ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসুচির মাধ্যমে তার কার্যক্রম শুরু করে ।

ব্র্যাকের বর্হিবিশ্ব কার্যক্রমের প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার দায়িদ্ব পালন
করে ব্র্যাক আর্ন্তজাতিক কর্মসুচি । দাতব্য সংস্থা হিসেবে আর্ন্তজাতিক কর্মসুচিকে
‘স্টিচিং ব্র্যাক ইন্টরন্যাশনাল’ নামে ২০০৯ সালে নেদারল্যান্ডে নিবন্ধন করা হয় । এর
মাধ্যমে ব্র্যাকের আর্ন্তজাতিক কর্মসুচি পরিচালনার ক্ষেত্রে লিগ্যাল কমপ্লায়েন্স, দক্ষতা
ও সুদৃঢ় সংযোগ গড়ে ওঠে । ব্র্যাক ইউকে এবং ইউএসএ স্বতন্ত্র দাতব্য সংস্থা হিসেবে ব্র্যাকের
জন্য বৈশ্বিক পরিমন্ডলে অনুদান সংগ্রহ করছে ।

ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন কমর্সূচি

ব্র্যাকের ওয়াটার , স্যানিটেশন
ও হাইজিন (ওয়াশ) কমর্সূচি বাংলাদেশের ২৪৮টি উপজেলার গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগনের
নিকট টেকসই ও সমন্বিত ওয়াটার, স্যানিটেশন ও হাইজিনসেবা পৌছে দেওয়ার মাধ্যমে অস্বাস্থ্যকর
ল্যাট্রিন, দুষিত পানি এবং অনিরাপদ স্বাস্থ্য অভ্যাসের কারণে সৃষ্ট দূষণচক্রের অবসানকল্পে
কাজ করছে । এসব উদ্যোগের স্থায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই কমসূর্চি তার আওতাধীন
জনগোষ্ঠীর মধ্যে অংশীদারিত্বের বোধ জাগিয়ে তোলে, স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের মঙ্গে
সংযোগ তৈরি করে দেয় এবং স্যানিটেশনপণ্যের স্থানীয় 
ব্যবসায়ীরা যাতে সল্পমূ্যে পণ্য সরবরাহ রেতে পারে সেজন্য কার্ক্রম পদক্ষেপ গ্রহণ
করে ।ওয়াশ কমসূর্চির কাজের পধান পাঁচটি ক্ষেত্র হল, পানি (পানির পুরোনো উৎসের প্রয়োজনীয়
সংস্কার এবং অগ্রসর প্রযুক্তির ব্যবহার) স্যনিটেশন (স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপন,
ক্ষুদ্র উদ্যোকাতাদের বিকাশ এবং দরিদ্র জনগণের জন্য ঋণ, ভতুর্কি ও  প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা), হাইজিন ( স্বাস্থ্যবিষয়ে
আচরণগত পরিবতর্নে সহায়তা), স্কুল স্যানিটেশন ও হাইজিন শিক্ষা  (মেয়েদের জন্য স্যানিটেশন সুবিধা ও হাইজিন শিক্ষার
ব্যবস্থ্যা) এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠনসমূহ, উদ্যোক্তা
ও কর্সূচির অন্য অংশীদারদের সহযোগীতা প্রদান) ।

প্রথম পর্যায়ে  ওয়াশ কর্সুচির আওতায় ১৫০টি উপজেলায় ৩৮.৮ মিলিয়ন
লোকের জন্য হাইজিন শিক্ষা,২৫.৬ মিলিয়ন লোকের জন্য স্যানিটারি ল্যাট্রিন এবং ১.৮ মিলিয়ন
লোকের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয় । দ্বিতীয় পর্য়ে আগের ১৫০টি উপজেলার
সঙ্গে আরও ২০টি নতুন উপজেলায় কার্ক্রম সম্প্রসারণপূর্বক কর্সূচির আওতাভূক্তির পরিমান
৯০ শতাংশ উন্নীত করে ২ মিলিয়ন লোকের জন্য স্যানিটারি টয়লেটের ব্যবস্থা, ৪.২ মিলিয়ন
লোকের হাইজিন সচেতনতা বৃদ্ধি, পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ০.৫ মিলিয়ন লোকের জন্য
বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা হবে ।

এই প্রকল্প স্যনিটেশনের ক্ষেত্রে
নব নব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যার লক্ষ্য হচ্ছে কর্সূচি পরিচালিনায় একটি টেকসই এবং বিস্তারশীল
মযেল তৈরি করা, যাতে ১৫০টি উপজেলাসহ নতুন উপজেলার অতিদরিদ্র লোকের সাশ্যয়ী ও প্রযুক্তিনির্র
পয়ঃনিস্কাশন সেবা প্রদান করা যায় । এই প্রকল্প স্যানিটারিরিসামগ্রীর বাণিজ্যিক বিপণনে
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের দক্ষতা চিহ্নিত করে তার বিকাশ ঘটায় এবং ল্যাট্রিনের বর্জ্র থেকে
উৎপাদিত বিপুল পরিমান জৈবসার বাজারজাত করে ।

নিরাপদ অভিবাসন কমর্সূচি

ব্র্যাকের অভিবাসন কমর্সূচি অভিবাসীদের
অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাদের প্রয়োজনীয় সেবাপ্রাপ্তি সহজ করার জন্য কাজ করছে
। এটি তাদেরকে প্রতারিত হওয়া থেকে রক্ষা করে । এই কমর্সূচি অভিবাসনর্পূব, অভিবাসনকালীন
এবং প্রত্যাবর্তনপরবর্তী-এই তিনটি পর্যায়ে সকল ক্ষেত্রে কাজ করে এবং অভিবাসী কর্মীদের
অধিকার ও মযর্দা রক্ষা করে নিরাপদ অভিযান নিশ্চিত করে ।

ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স

উদ্ভাবনশীল, টেকসই এবং জনগোষ্ঠীকেন্দ্রিক
মাইক্রোফাইন্যান্স কমর্সূচি ব্র্যাকের সামগ্রিক কর্মকৌশল অনৃসরন করে প্রান্তিক মানুষের
জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করছে । গত চার দশকের অভিযাত্রায় এই কমর্সূচি
দরিদ্রদের আর্থিক সহায়তা এবং জীবনমান উন্নয়নের উপকরণ জুগিয়ে এক্ষত্রে বিশ্বের সর্ববৃহৎ
সেবাদানকারী হিসেবেন নিজেদের তুলে ধরেছে । লক্ষ লক্ষ মানুষ েএই সহায়তা নিয়ে তাদের জীবনে
ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে ।

বাংলাদেশে এই কমর্সূচির সদস্যসংখ্যা
৭.৭৮ মিলিয়ন এবং ৬৪টি জেলায় বকেয়া ঋণের পরিমান ৬৯৩.৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার । বাংলাদেশ
ছাড়াও আফগানিস্তান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা, লাইবেরিয়া
এবং তানজানিয়ায় ক্র্যাকের মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচি কাযর্ক্রম পরিচালিত হচ্ছে ।

সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচি

ব্র্যাক ২০১১ সালে কেীশলত অগ্রাধিকারের
ভিত্তিতে সর্বাধিক প্রান্তিক ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর বহুমাত্রিক দারিদ্র দুরীকরণের লক্ষ্যে
ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (আইডিপি) তথা সমন্নিত উন্নয়ন কর্মসুচি শুরু করেছে।
দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যথা হাওর ও চরাঞ্চলে বসবাসকারী এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠী, যারা
উন্নয়ন উদ্যোগের মূলধারা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে, তাদের ও বিপন্নতা হ্রাসকল্পে আইডিপি কাজ
করে চলেছে ।

ব্র্যাকের মৌলিক সেবা, উন্নত
জীবিকার সুযোগ, উদ্বুব্ধকরণ ও ক্ষমতায়ন, গবেষনা, ষ্গন ও তথ্যভান্ডার ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি
ক্ষেত্রে একীভূত ও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে আইডিপি কাজ করে । নোয়াখালির ভাটি অঞ্চলের
চর এলাকায় চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রোজেক্ট (সিডিএসপি-৪), নওগা, জয়পুরহাট
ও দিনাজপুরের সমতল অঞ্চলের আদিবাসী এবং হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের হাওর জনগোষ্ঠীর জন্য
ইন্টিগেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট পরিচালিত হচ্ছে ।

মানবাধিকার আইন ও সহায়তা কর্মসূচি

ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা (এইচআরএলএস) কর্মসূচি দরিদ্র ও
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে মানবাধিকার এবং আইনগত অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলার জন্য
আইনশিক্ষা, আইনি সহায়তা ও ক্ষমতায়নের জন্য তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে। এই
কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বৈষম্য ও বঞ্চনা থেকে রক্ষা করা এবং
তাদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা। এ পর্যন্ত এই কর্মসূচির আওতায়
৩,৭৪৮,৬৮৯ জন আইনশিক্ষা লাভ করেছেন, ৫১৭টি আইনসহায়তা ক্লিনিক ১৭৮,৯২৬টি অভিযোগ
গ্রহণ করেছে, ৯৬৭২২টি মামলার ক্ষেত্রে বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি করা হয়েছে, আদালতে
বিচাধীন ১৬২৫৫টি মামলার রায় আমাদের মক্কেলদের পক্ষে হয়েছে এবং মামলা ও বিকল্প
বিরোধ নিস্পত্তির মাধ্যমে মক্কেলদের আর্থিক ক্ষতিপূরণবাবদ ৮০২,২২১,৯৮৬ টাকা আদায়
করে দেওয়া হয়েছে।

মানবাধিকার আইন ও সহায়তা কর্মসূচির মূল বৈশিষ্ট্য হল:


  • দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে মানবাধিকার ও আইন সম্পর্কে সচেতন
    করে তোলা এবং তাদের ক্ষমতায়ন ঘটানো ।

  • আইনি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে বিরোধ নিস্পত্তি করা।

  • শিশু ও নরীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইনি ব্যবস্থাকে কাজে লাগানো।

  • আইনি দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে মানবাধিকার জেন্ডারসাম্যরে মূলনীতি
    সম্পর্কে সচেতন করার জন্য অগ্রনী ভূমিকা পালন করা।

  • সামাজিক কর্মকান্ডকে অনুপ্রাণিত করবার লক্ষ্যে সরকার ও
    অধিকারভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনে সহায়তা করা।

  • প্রাতিষ্ঠানিক পূনর্গঠন এবং সুস্থচর্চার বিকাশে এক সঙ্গে কাজ করা।

ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচি

ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচি দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত এবং প্রান্তবাসী
মানুষের কাছে প্রতিরোধমূলক, প্রচারমূলক, প্রতিকারমূলক ও পূনর্বাসনমূলক সমন্বিত
স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের জন্য জনগোষ্ঠীর
ক্ষমতা, মানবসম্পদের উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ এবং সহায়তামূলক পরিবেশ তৈরী
জরুরী বলে স্বাস্থ্য কর্মসূচি বিবেচনা করে। ব্র্যাকের স্বাস্থ্য কার্যক্রমে মূখ্য
ভূমিকা পালন করেন স্বাস্থ্যসেবিকারা। গ্রাম ও শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নারীরা
ব্র্যাক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাস্থ্যসেবিকার কাজ করেন। তারা তাদের এলাকায় দরিদ্র
লোকদের দোরগোড়ায় গুরুত্বপূর্ন স্বাস্থ্যরসবা ও সামগ্রী পৌঁছে দেন। ব্র্যাক কর্তৃক
প্রশিক্ষিত এই স্বাস্থ্যসেবিকারা দেশের বার কোটি মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে
জরুরী স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছেন। এভাবে তারা দেশের প্রচলিত স্বাস্থ্যসেবা এবং
স্বাস্থ্যসেবাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে সেতুবদ্ধ তৈরী করে দিচ্ছেন। প্রাথমিক
স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বহুবিধ উদ্যোগের
প্রবর্তন করা হয়েছে। জরুরী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ধরনের
স্বাস্থ্য-উদ্যোগ সাধারণ জনগনের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন।এগুলোর মধ্যে রয়েছে গর্ভবতী, মা
ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টিশিক্ষা, ছাঁয়াচে ও অছোঁয়াচে রোগ প্রতিরোধ ও
সাধারণ জীবনমান উন্নয়ন। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় স্বাস্থ্য এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে
যাওয়ার লক্ষ্যে ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচি সরকার ও অন্যান্য বেসরকারি উন্নয়ন
সংস্থার সঙ্গে যৌতভাবে কাজ করছে।

ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি

বাংলাদেশ, আফগানিস্থান, পাকিস্থান, উগান্ডা, দক্ষিণ সুদান এবং
ফিলিপাইন-এই ছয়টি দেশে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই
কর্মসূচি বিশ্বব্যাপী সাত লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রী নিয়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বেসরকারী
সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।

ব্র্যাকের কার্যকর এবং সাশ্রয়ী মডেলের স্কুলগুলো প্রাতিষ্ঠানিক
শিক্ষা থেকে ঝরে-পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পড়ালেখার সুযোগ করে দিচ্ছে।
ব্র্যাকস্কুলগুলো নতুন ধরণের শিক্ষাদানপদ্ধতি ও উপকরণ নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থার
সম্পূরক হিসেবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ শিশুকে শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসছে,
যাদের বেশিরভাগই অতিদারিদ্র্য, সংঘাত, বঞ্চনা ও উচ্ছেদের শিকার। যেসব এলাকা বছরের
একটি নির্দিষ্ট সময় জলমগ্ন থাকে, সেখানকার শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে
ব্র্যাক নৌকা স্কুল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচি সুবিধাবঞ্চিত ঘরের শিশুদের
প্রাক-প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষাদান করে মূলধারার স্কুলের জন্য প্রস্তুত করে তোলে।
বিশেষায়িত স্কুলের মাধ্যমে আদিবাসি জনগোষ্ঠীর শিশু এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন
শিশুদের শিক্ষার অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। শিশুদের সর্বাঙ্গীন বিকাশ নিশ্চিত করার
লক্ষ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্কুলে সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।

ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি গ্রামাঞ্চলের মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক এবং
ব্যবসাথাপনা কমিটির সদস্যদের প্রয়োজনভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করে। প্রশিক্ষণের
বিষয়গুলো হচ্ছে: দক্ষতা বৃদ্ধি, সহপাঠক্রম ও দলগত কাঝে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করে
মেন্টরিং উদ্যোগের বাস্তবায়ন এবং এর মাধ্যমেক্লাসে উপস্থিতি বাড়ানো ও ঝরে পড়া রোধ।
মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে ই-লানিং পদ্ধতির প্রচলন করার ফলে বোর্ড পরীক্ষায়
শিক্ষার্থীরা কৃতিত্ব দেখিয়েছে। ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি মেধাবৃত্তি কার্যক্রম
পরিচালনা করে যার মাধ্যমে মেধাবী দরিদ্র শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক
পর্যায়ে দেশে এবং দেশের বাইরে পড়ালেখা করা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পাচ্ছে।ি

কিশোর ও তরুণবয়সীদের প্রতি বাড়তি মনোযোগ প্রদান করে ব্র্যাক শিক্ষা
কর্মসূচি বিশেষ কার্যক্রমের প্রচলন করেছে।এর মা্ধ্যমে তাদেরকে জীবনদক্ষতা, জীবিকা
এবং কর্মক্ষতার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মৌলিক আর্থিক শিক্ষা ও আর্থিক সেবার
প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ব্র্যাকের কিশোর কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা একটি নিরাপদ
পরিবেশে সমবয়সীদের সঙ্গে মেলামেশার মাধ্যমে তাদের চরিত্র গঠন ও সামাজিক দক্ষতা
বৃদ্ধির সুযোগ পায়। এই ক্লাবগুলো কিশোরী মেয়েদের বিকাশের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে
সামাজিক সচেতনতা তৈরী করতে সহায়তা করে। আমাদের বহুমূখি গণকেন্দ্র পাঠাগারগুলোর
মোবাইল লাইব্রেরি বাড়ি বাড়ি বই পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের পাঠাভ্যাস গড়ে তুলছে
এবং একই গ্রামীণ যুববয়সীদের কর্মসংস্থানে সহপয়তা করছে।

দুর্যোগ, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি

দুর্যোগ, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন (ডিইসিসি)কর্মসূচির মূল
লক্ষ্য হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ব্র্যাকের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা
বৃদ্ধি, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, খবর প্রদান এবং পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক
দুর্যোগের মধ্যে যোগসূত্রবিষয়ক জ্ঞান প্রদান করে দুর্যোগ মোকাবেলা ও
ঝুঁকিহৃাসকল্পে এলাকার জনগোষ্ঠীকে প্রস্তুত করে তোলা।

দুর্যোগকালীন সময়কে নানা স্তরে ভাগ করে জনগোষ্ঠীর নিকট দ্রুত
সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ডিইসিসি কর্মসূচি ব্র্যাক এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং
প্রসিজরস) তৈরী করেছে।এতে দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে ব্র্যাককর্মী, প্রত্যেক
মাঠকর্মী এবং কর্মসূচির সদস্যদের করণীয় সম্পর্কিত কার্যপ্রনালি লিপিবদ্ধ করা আছ। এ
ছাড়াও ওয়েব এবং মোবাইলফোনে আবহাওয়ার পূর্বাভাস তথ্য ইনটেগ্রেশন কোলাবরেশন অ্যান্ড
র‌্যাপিড ইমারজেন্সি সার্পোট সার্ভিস ( আইসিআরইএসএস)-এর মাধ্যমে সম্ভাব্য
দুর্যোগের সময়সম্পর্কিত তথ্যসংগ্রহ করে জনগোষ্ঠীকে সচেতন করে তোলা হয়। ডিইসিসি-র
লক্ষ্য অর্জনে প্রযুক্তির উন্নতিকে সংযোজিত পরিমাপক হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।

তদুপরি বাংলাদেশে কৃষিকাজে সহায়তা করার জন্য কৃষিপ্রধান অঞ্চলসমূহে
আটটি আবহাওয়া অফিস স্থাপন করা হয়েছে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য দুটি
স্থানান্তরযোগ্য ডিস্যালাইন প্ল্যান্ট আমদানি করা হয়েছে এবং তেতাল্লিশটি
দুর্যোগসহনীয় আবাসন এবং একটি দুর্যোগসহনীয় স্কুল তৈরী করা হয়েছে। এ ছাড়া এই বিভাগ
স্থানীয় পটভূমিতে আন্তর্জাতিক  স্থানীয়
প্রতিষ্ঠানসমূহের উপাত্ত বিশ্লেষণ প্রয়োগিক সহায়তা, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং
গবেষণাকাজের মধ্যে সংযোগসূত্র গড়ে তোলে।

সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচি

ব্র্যাক ২০১১ সালে কেীশলত অগ্রাধিকারের
ভিত্তিতে সর্বাধিক প্রান্তিক ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর বহুমাত্রিক দারিদ্র দুরীকরণের লক্ষ্যে
ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (আইডিপি) তথা সমন্নিত উন্নয়ন কর্মসুচি শুরু করেছে।
দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যথা হাওর ও চরাঞ্চলে বসবাসকারী এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠী, যারা
উন্নয়ন উদ্যোগের মূলধারা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে, তাদের ও বিপন্নতা হ্রাসকল্পে আইডিপি কাজ
করে চলেছে ।

ব্র্যাকের মৌলিক সেবা, উন্নত
জীবিকার সুযোগ, উদ্বুব্ধকরণ ও ক্ষমতায়ন, গবেষনা, ষ্গন ও তথ্যভান্ডার ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি
ক্ষেত্রে একীভূত ও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে আইডিপি কাজ করে । নোয়াখালির ভাটি অঞ্চলের
চর এলাকায় চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রোজেক্ট (সিডিএসপি-৪), নওগা, জয়পুরহাট
ও দিনাজপুরের সমতল অঞ্চলের আদিবাসী এবং হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের হাওর জনগোষ্ঠীর জন্য
ইন্টিগেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট পরিচালিত হচ্ছে ।

ব্র্যাক একটি উন্নয়ন সংস্থা দরিদ্র তাদের নিজের জীবনে পরিবর্তন আনার

ব্র্যাক একটি উন্নয়ন সংস্থা দরিদ্র তাদের নিজের জীবনে পরিবর্তন আনার empowering দ্বারা ডেডিকেটেড দারিদ্র্য নির্বাপক যাও. আমরা বাংলাদেশে 1972 সালে প্রতিষ্ঠিত এবং আমাদের বিবর্তনের অবশ্যই উপর, স্বীকৃতি লাভ করবে এবং অনেক দারিদ্র্য বিভিন্ন বাস্তবতার মোকাবেলা মধ্যে একটি পথিকৃৎ হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত হয়. আরো ... ব্র্যাক একটি উন্নয়ন সংস্থা দরিদ্র তাদের নিজের জীবনে পরিবর্তন আনার empowering দ্বারা ডেডিকেটেড দারিদ্র্য নির্বাপক যাও. আমরা বাংলাদেশে 1972 সালে প্রতিষ্ঠিত এবং আমাদের বিবর্তনের অবশ্যই উপর, স্বীকৃতি লাভ করবে এবং অনেক দারিদ্র্য বিভিন্ন বাস্তবতার মোকাবেলা মধ্যে একটি পথিকৃৎ হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত হয়. আরো ... ব্র্যাক একটি উন্নয়ন সংস্থা দরিদ্র তাদের নিজের জীবনে পরিবর্তন আনার empowering দ্বারা ডেডিকেটেড দারিদ্র্য নির্বাপক যাও. আমরা বাংলাদেশে 1972 সালে প্রতিষ্ঠিত এবং আমাদের বিবর্তনের অবশ্যই উপর, স্বীকৃতি লাভ করবে এবং অনেক দারিদ্র্য বিভিন্ন বাস্তবতার মোকাবেলা মধ্যে একটি পথিকৃৎ হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত হয়. আরো ... ব্র্যাক একটি উ